পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে রবিবার পার্লামেন্টে এক অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট হওয়ার কথা ছিল, যেখানে তিনি পরাজিত হতেন বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়েছেন, যার মানে পাকিস্তানে এখন আগাম নির্বাচন হতে হবে। ইমরান খানের অভিযোগ তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ষড়যন্ত্র করছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় আসা ইমরান খানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন কী? তার পেছনে সাধারণ মানুষের সমর্থন কতটা আছে?
ইসলামাবাদের এক মধ্যবিত্ত অধ্যুষিত এলাকায় নিজের নাপিতের দোকানে কাজ করছেন ৩২-বছর বয়সী মুজাহিদ আলি। তার পরনে ধূসর রঙের সালওয়ার-কামিজ, পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। ইমরান খানকে যদি ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়, তাতে দুঃখ পাবেন না তিনি।
“তার শাসনামলে আমাদের জীবন ভালো কাটেনি,” তিক্ত স্বরে বলছিলেন তিনি।
পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক ইমরান খান ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই সংসদীয় এলাকা থেকে নির্বাচিত হন। তাকে ভোট দিয়েছিলেন মুজাহিদ। আরও অনেকের মতো তিনি আশা করেছিলেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে ইমরান খান দেশে পরিবর্তন আনতে পারবেন। কারণ পাকিস্তানের রাজনীতিতে বহু বছর ধরে চলছিল দুটি রাজনৈতিক পরিবারের বংশানুক্রমিক আধিপত্য।
কিন্তু এখন পাকিস্তানে যেভাবে জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে গেছে, তার জন্য মুজাহিদ আলি ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টিকেই দায়ী করেন।
“সারাদিন কাজ করে আয় করি মাত্র পাঁচশো রুপি (২.৭০ ডলার),” বিবিসিকে বলছিলেন তিনি, “কিন্তু এখন এক কিলোগ্রাম মাখনের দামই পাঁচশো রুপি। আগে এটা কিনতাম ১৮০ রুপিতে।”
পাকিস্তানে ইমরান খানের পর সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যার নাম আসছে, তিনি হচ্ছেন শাহবাজ শরিফ। তিনি পাকিস্তানের তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরিফের ভাই। নাওয়াজ শরিফ দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। তবে তিনি সবসময় দাবি করে এসেছেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
শাহবাজ শরিফের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। তবে তিনিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। দুর্নীতির এসব অভিযোগ সত্ত্বেও শাহবাজ শরিফকেই সমর্থন করেন মুজাহিদ আলি।