চাপের মুখে একের পর এক এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে ইউক্রেন

চাপের মুখে একের পর এক এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে ইউক্রেন

প্রথম থেকেই বিভিন্ন লড়াইয়ে নিজেদের দুরাবস্থার কথা স্বীকার থেকে বিরত ছিল ইউক্রেন। বরাবরই রাশিয়াকে কীভাবে পরাস্ত করা হয়েছে কিংবা রুশ বাহিনী কীভাবে মনোবল হারিয়ে ফেলেছে তাই বলে গেছে দেশটি। তবে এবার অবস্থা আসলেই গুরুতর। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও। তারা জানিয়েছে, ডনবাস অঞ্চলে রুশ বাহিনীর আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের সৈন্যরা প্রচণ্ড চাপের মুখে আছে।
বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বদিকের ডনবাস অঞ্চলের সেভারোডোনেৎস্ক এবং লিসিচানস্ক শহর দখলে উঠে পরে লেগেছে রাশিয়া। এই দুটি শহরকে ঘিরে ফেলার চেষ্টায় এগুলোর ওপর রুশ বাহিনী প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করছে। দনেৎস্কের প্রায় পুরোটা এবং লুহানস্কের অধিকাংশ এলাকাই এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। যে এলাকাগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই সেগুলোই দখলে নেবার চেষ্টা করছে রুশ সেনারা।

ডনবাস অঞ্চলের অর্ধেক এলাকাই লুহানস্কের অন্তর্গত। রাশিয়া এখন লুহানস্ক দখলে তাদের যুদ্ধ পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। এটি দখল হলেই সমগ্র ডনবাস হবে রাশিয়া

ধারণা করা হচ্ছে, ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারলেই ইউক্রেন যুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পূর্ব ডনবাসে রাশিয়া ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম দখল করেছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে। তারা এটা করতে পারছে কারণ সৈন্য, কামান, সাঁজোয়া যান, এবং বিমানবাহিনীর শক্তি সব ক্ষেত্রেই সংখ্যার দিক থেকে ইউক্রেনকে পেছনে ফেলেছে রুশরা।
যুদ্ধের প্রথম দিকে রাশিয়ার সফলতা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এবার আর তা নেই। ডনবাসে স্পষ্টতই তারা সফলতার মুখ দেখছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বিষয়টি মেনে নিয়ে এবিসি নিউজকে বলেছেন, ডনবাস অঞ্চলে একেকজন ইউক্রেনীয় সেনার বিপরীতে সাতজন করে রুশ সেনা আছে। অপরদিকে কিয়েভে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ওলেক্সান্দর মোতুজিয়ানিক বলছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনো ওই দুটো শহরে যাবার প্রধান রাস্তাটি নিয়ন্ত্রণ করছে তবে যুদ্ধ এখনো চলছে।

লুহানস্ক প্রদেশের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেন, ওই রাস্তাটি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ চলছে কিন্তু এটি এখনো সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি। তিনি বলেন, দিনরাত গোলাবর্ষণ, মিসাইল নিক্ষেপ ও বিমান থেকে বোমা ফেলে সেভারোডোনেৎস্ক শহরটিকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। হাইদাই আরো জানান, রুশ বাহিনী এখন এতটাই কাছে চলে এসেছে যে তারা রকেটের পাশাপাশি মর্টারও ব্যবহার করছে। এছাড়া এখান থেকে অনেকটা দূরে ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া এবং ক্রিভি রিহ শহর দুটির ওপরও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এতে বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

Related Articles