বাংলাদেশে ১৬ লাখ শিশুর জরুরি সাহায্য প্রয়োজন

বাংলাদেশে ১৬ লাখ শিশুর জরুরি সাহায্য প্রয়োজন

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলো এখন ভাসছে প্রবল বন্যায়। যাতে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে অন্তত ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ। যাদের মধ্যে ১৬ লাখই শিশু। এই ১৬ লাখ শিশুর এখন জরুরিভিত্তিতে সাহায্যের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। এরই মধ্যে বন্যায় আক্রান্ত শিশু ও তাদের পরিবারকে সাহায্য করতে জাতিসংঘের সংস্থাটি দাতা দেশগুলোর কাছে জরুরি ২৫ লাখ ডলার তহবিল চেয়েছে। গত সোমবার এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে এবং জরুরি পানি ও ওষুধ সরবরাহ করছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, এখানকার শিশুদের এখন নিরাপদ খাবার পানি প্রয়োজন। নইলে তাদের পানিবাহিত ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। ইউনিসেফ এরই মধ্যে ৪ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করেছে। এর মাধ্যমে ৮০ হাজারের বেশি বন্যা আক্রান্ত পরিবারের এক সপ্তাহ পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত হবে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে সাহায্য করতে আরও কয়েক মিলিয়ন পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করবে তারা। এ ছাড়া ১০ হাজারের বেশি পানির কনটেইনার এবং নারীদের জন্য কয়েক হাজার ‘হাইজিন কিট’ সরবরাহ করবে। জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুবিধা বৃদ্ধিতে জরুরি ওষুধ সরবরাহের কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি। তারা বলছে, সিলেট বিভাগের ৯০ শতাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রই প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত রোগও। এ ছাড়া শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ডুবে যাওয়া। বন্যার কারণে ৩৬ হাজারের বেশি শিশুকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিতে হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বাতিল হয়েছে পরীক্ষা। এমনিতেই দীর্ঘ ১৮ মাস কোভিড মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিশুদের শিক্ষাজীবন। এখন বন্যার কারণে সেই ক্ষতি আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত বন্যায় বাংলাদেশে অন্তত ৮ শিশু প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে ইউনিসেফ। এ বিষয়ে ইয়েট বলেন, যেসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে তাদের জন্য আমাদের হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত। এই দুর্যোগে সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। তাই তাদের যা দরকার তা নিশ্চিতে সরকার ও সহযোগী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ। খবর দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের।

Related Articles