রাজশাহীর গোদাগাড়ী কলেজের অধ্যক্ষকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ‘মারধরের’ শিকার হওয়ার খবরে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশিষ্ট ২৪ নাগরিক। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে তারা বলেছেন, শিক্ষককে মারধর করার যে ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে তাতে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
বিবৃতিদাতারা হলেন- অধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত, মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, কৃষক সমিতির সভাপতি এসএমএ সবুর, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, উন্নয়নকর্মী রোকেয়া কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সংস্কৃতিকর্মী সেলু বাসিত, এ কে আজাদ, অলক দাস গুপ্ত, ইমারত শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, গণজাগরন মঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দীপায়ন খীসা, সংস্কৃতি মঞ্চের আহ্বায়ক সেলিম রেজা।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, রাজশাহীর কলেজের অধ্যক্ষকে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী কর্তৃক মারধর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, গত কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকদের ওপর হামলা, নির্যাতন, লাঞ্ছনা, অবমাননার ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে। ক্ষেত্রবিশেষে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে শিক্ষকদের নির্যাতন করা হচ্ছে। তারা আরও বলেন, গত ৭ই জুলাই রাজশাহীতে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী নিজ কার্যালয়ে ডেকে একজন কলেজ শিক্ষককে নির্মমভাবে পেটানোর যে বর্ণনা আমরা গণমাধ্যমে পেয়েছি, তাতে আমরা বিস্মিত, স্তম্ভিত ও উদ্বিগ্ন। একজন আইন প্রণেতা আইন লঙ্ঘন করতে পারেন না। একজন সংসদ সদস্যের কলেজ শিক্ষককে এভাবে পেটানোর ঘটনা ন্যাক্কারজনক। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে সমাজের সম্মানজনক পেশা শিক্ষকতায় নিয়োজিতদের সম্পর্কে যে ঘৃণ্য অবমাননাকর মনোভাব প্রকাশ করেছেন, তাতে তিনি সংসদ সদস্যের শপথ ভঙ্গ করেছেন এবং সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে আমরা মনে করি। এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি স্পিকারের রুলিং প্রদানসহ সংসদ সদস্য ওমর ফারুককে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণ অনুসন্ধানসহ ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) ও পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা