পটিয়ার বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাংচুর, ক্যাম্পে-মোটরসাইকেলে আগুন

পটিয়ার বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাংচুর, ক্যাম্পে-মোটরসাইকেলে আগুন

পটিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা :  চট্টগ্রামের পটিয়ায় নৌকা প্রার্থীর দুই অফিসে স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সমর্থকরা আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।  এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকাও আগুনে পুড়েছে।

এর আগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়কের পটিয়া উপজেলার গৈড়লার টেক এলাকায় নৌকার প্রচারনা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে বৃহস্পতিবার রাতে পথরুদ্ধ করে ধারালো কিরিচ দিয়ে কুপিয়েছে নৌকার সমর্থক এসএম ফখরুল আলম সজীবকে (৪০)।

সে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এসময় তার মোটরসাইকেলে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় লোকজন সজীবকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। অতিরিক্ত রক্তকনের কারণে তার অবস্থা আশংকাজনক। খবর পেয়ে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন

জানা গেছে, দলীয় প্রতীক না পেয়ে চট্টগ্রাম-১২ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন তিনবারের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন দলীয় লোকজনকে কোণঠাসা করে রাখার কারণে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগ নৌকার পক্ষে একাট্টা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনা শেষ করে পটিয়া থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সজীব।

সে পটিয়ার গৈড়লার টেক এলাকায় পৌছলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন তার পথরুদ্ধ করে কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে এবং মোটরসাইকেল পুড়ে দেন। সে জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পাইরোল গ্রামের বাসিন্দা। একই রাতে উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে ভান্ডারগাঁও ও ছনহরা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আলমদারপাড়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন পুড়ে দিয়েছে নৌকা প্রার্থীর দুইটি অফিস। আগুনে পুড়েছে শেখ হাসিনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার ছবিও।

হামলার এক পর্যায়ে তারা ঈগলের স্লোগান দিতে দিতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম জানিয়েছেন, তিনি রাতে চট্টগ্রাম শহরের বাসায় ফিরে যাওয়ার পর জানতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন রাতে নৌকা প্রার্থীর অফিসে আগুন দিয়ে জ্বালিয় দিয়েছে। পুড়ে দেওয়া অফিসটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় হওয়ার কারণে বর্তমানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। রাতে ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হলে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পদিরর্শন করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক নুরুল হুদার নেতৃত্বে অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কারী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ জানিয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের পরাজয়ের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত হয়ে সংখ্যালঘু এলাকায় ঢুকে বিভিন্ন ধরনের আতংক ছড়াচ্ছে।  কাশিয়াইশ, ছনহরা, গৈড়লা, হাবিলাসদ্বীপ ও কেলিশহর ইউনিয়নে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা গুলোতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা করেছে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ভুলে গেছেন তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে তিন তিনবারের সংসদ সদস্য হয়েছেন এবং এখনো জাতীয় সংসদের হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার সমর্থকদের নৌকা প্রতীক, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি পুড়ানো জঘন্যতম একটি ঘটনা ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গৈড়লার টেকে যে হামলা হয়েছে তা জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ ও ছনহরা ইউনিয়নে ওসমান আলমদারের নেতৃত্ব ঘটনার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর দুটি অফিসে আগুন ও প্রার্থীর সমর্থকের গাড়িতে আগুন দিয়ে হামলার ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সত্যতা পেলে অবশ্যই মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।

Related Articles